কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, দেশে খাদ্য নিয়ে কোনো সংকট হবে না। গরিবদের খাদ্য নিয়ে যাতে কোনো কষ্ট না হয়, সে জন্য সরকার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারে গমের দাম বাড়ার পরও আমরা সর্বোচ্চ দাম দিয়ে গম কিনছি।

দেশে নিরাপদ খাদ্যের চাহিদা পূরণে সরকার চেষ্টা করে যাচ্ছে অনবরত। তাই দেশে খাদ্য নিয়ে কোনো সংকট হওয়ার আশঙ্কা নেই।’ রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টার সম্মেলনকক্ষে বৃহস্পতিবার এক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। ইনস্টিটিউট অব ওয়াটার মডেলিং এই কর্মশালার আয়োজন করে।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘আগস্ট মাসে সচরাচর প্রতিদিন বৃষ্টি হয়। তবে এ বছর আগস্ট মাসে এক দিনও তেমনভাবে বৃষ্টি হয়নি। আমি কৃষিমন্ত্রী হিসেবে প্রতিদিন দোয়া করেছি যেন আগামীকাল বৃষ্টি হয়। বৃষ্টি আমাদের মতো কৃষিপ্রধান দেশের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা কৃষকরা ভালো বোঝেন। ‘কৃষি খাতের উন্নয়নে অনেক বিষয় নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। বাংলাদেশ ধান উৎপাদনে বিশ্বে তৃতীয় অবস্থানে আছে। তবে ইদানীং বৃষ্টির সমস্যার কারণে অনেক সময়ই উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে।’

আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘দেশের জনসংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। দেশে বর্তমানে মিলিয়নেয়ারের মতো রোহিঙ্গা আছে। এটা একটা বড় সমস্যা। কীভাবে আমরা বর্তমান অবস্থা থেকে আরও টেকসই হব, সেটা নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। বাংলাদেশের মানুষ আটা খায়, যখন চালের চেয়ে দাম কম থাকে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে সব কিছুর দাম বেড়ে গেছে। ফলে এখন আটার দামও বেড়েছে।’

কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা চালের উৎপাদন বাড়াতে কাজ করছি। আমাদের বিজ্ঞানীরা ধানের বিভিন্ন জাত নিয়ে আসছে। বিআর ২৯, ২০, ৮৯, ৯২ এবং বিআর ১০০ আমরা খুব তাড়াতাড়ি নিয়ে আসব। এসব জাত আনতে কিছু সমস্যাও আছে। তবে সব সমস্যা সমাধান করে কৃষকের কাছে নিতে পারলে তা খুবই ভালো হবে। আমি আশা করি, আমাদের খাদ্য নিরাপত্তা আরও টেকসই হবে। খাদ্য নিরাপত্তার উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে আমাদের অভিজ্ঞরা।’

রাজ্জাক বলেন, ‘বাংলাদেশ অ্যাগ্রিকালচার রিসার্চ ইনস্টিটিউটে (বারি) অনেক বড় বিনিয়োগ দরকার। বারির মাধ্যমে আমরা বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্প নিয়ে কৃষি খাতের লোকসান দূর করতে পারি। প্রধানমন্ত্রী আমাকে বলেছেন, দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগের বিষয়ে কাজ চলছে।’ অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কবির বিন আনোয়ার এবং বিশেষ অতিথি কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব সায়েদুল ইসলাম।

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. দেবাশিষ সরকার, বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন প্রকল্পের নির্বাহী পরিচালক মো. আব্দুর রশিদ, ওয়ারপো মহাপরিচালক মো. দেলোয়ার হোসেন, ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. লুৎফুল হাসানসহ বিভিন্ন বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা বক্তব্য দেন।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য উপস্থাপন করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত অস্ট্রেলিয়ার হাইকমিশনের ডেপুটি হাইকমিশনার নাদরিয়া সিম্পসন এবং এ-সংক্রান্ত প্রকল্পের সারসংক্ষেপ তুলে ধরেন সিএসআইআরও বিশেষজ্ঞ ড. মোহাম্মদ মাইনুদ্দিন। সভাপতিত্ব করেন আইডব্লিউএম নির্বাহী পরিচালক আবু সালেহ খান।